Cover image of গাভী বিত্তান্ত

গাভী বিত্তান্ত

আহমদ ছফা
উপন্যাস

প্রাথমিক অংশ

আবু জুনায়েদের উপাচার্য পদে নিয়োগপ্রাপ্তির ঘটনাটি প্রমাণ করে দিল আমাদের এই যুগেও আশ্চর্য ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ফ্যাকাল্টির সদস্যবৃন্দ আবু জুনায়েদের উপাচার্যের সিংহাসনে আরোহণের ব্যাপারটিকে নতুন বছরের সবচাইতে বড় মজার কাণ্ড বলে ব্যাখ্যা করলেন। আবু জুনায়েদ স্বয়ং বিস্মিত হয়েছেন সবচাইতে বেশি। আবু জুনায়েদের বেগম নুরুন্নাহার বানু খবরটি শোনার পর থেকে আণ্ডাপাড়া মুরগির মতো চিৎকার করতে থাকলেন। তিনি সকলের কাছে বলে বেড়াতে লাগলেন যে তার ভাগ্যেই আবু জুনায়েদ এমন এক লাফে অত উঁচু জায়গায় উঠতে পারলেন । কিছু মানুষ অভিনন্দন জানাতে আবু জুনায়েদের বাড়িতে এসেছিলেন। নুরুন্নাহার বানু তাদের প্রায় প্রতিজনের কাছে তার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর থেকে কী করে একের পর এক আবু জুনায়েদের ভাগ্যের দুয়ার খুলে যাচ্ছে সে কথা পাঁচকাহন করে বলেছেন । অমন ভাগ্যবতী বেগমের স্বামী না হলে, একদম বিনা দেন-দরবারে দেশের সবচাইতে প্রাচীন, সবচাইতে সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদটি কী করে আবু জুনায়েদের ভাগ্যে ঝরে পড়তে পারে। যারা গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই মুখে কিছু না বললেও মনে মনে মেনে নিতে দ্বিধা করেননি যে একমাত্র স্ত্রী ভাগ্যেই এরকম অঘটন ঘটতে পারে।